প্রিন্ট এর তারিখঃ May 10, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ May 8, 2025 ইং
সীমান্তে বিএসএফের খেলার মাঠ দখলের খবরে উত্তেজনা

বৃহস্পতিবার (৮ মে) বেলা ১১টার দিকে জৈন্তাপুর উপজেলার পূর্বজাফলং ইউনিয়নের নলজুরী আমস্বপ্ন সীমান্তের ১২৭৮ নম্বর সীমান্ত পিলারের ৭৯ নম্বর সাবপিলার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ-ভারত যৌথ জরিপের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের দখলে থাকা একটি খেলার মাঠ পরিমাপের উদ্যোগ নিয়েছিলেন বিজিবি-বিএসএফ যৌথ জরিপ দলের সদস্যরা। এসময় বাংলাদেশের একটি খেলার মাঠ বিএসএফ দখল করে নিচ্ছে, এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে মাঠে উপস্থিত হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এতে যৌথ জরিপ দল ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা ফিরে যান।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নলজুরীর আমস্বপ্ন সীমান্তে একটি খেলার মাঠ জরিপ করতে আসে বিএসএফ। এ সময় মাঠের কিছু অংশ নিজেদের দাবি করে লাল পতাকা টাঙানোর চেষ্টা করে তারা। এ খবরে স্থানীয় লোকজন সেখানে জড়ো হন। বিষয়টি নিয়ে বিএসএফের সঙ্গে তাদের উত্তেজনা দেখা দেয়। তাৎক্ষণিকভাবে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এ অবস্থায় জরিপ কাজ না করেই ফিরে যায় বিএসএফ।
নলজুরী গ্রামের বাসিন্দা শাহজাহান মিয়া বলেন, “আমস্বপ্ন সীমান্তের বাংলাদেশ অভ্যন্তরে একটি খেলার মাঠ আছে। সেখানে স্থানীয়রা খেলাধুলা করে। বৃহস্পতিবার সকালে বিএসএফ মাঠের ভেতরে কিছু অংশ নিজেদের দাবি করে লাল পতাকা টানিয়ে সীমানা দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় এলাকার লোকজন বাধা দেন। পরে স্থানীয়দের সঙ্গে তাদের উত্তেজনা দেখা দেয়। এরপর বিজিবির হস্তক্ষেপে শান্ত হন স্থানীয় লোকজন।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট ৪৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ নাজমুল হক বলেন, “সীমান্তের আমস্বপ্ন এলাকার ওই খেলার মাঠ দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের ছিল। ২০১৫ সালে ছিটমহল বিনিময় চুক্তির আওতায় তৎকালীন সরকার ওই মাঠ ভারতকে হস্তান্তর করেছিল। তবে এই দাবি মানতে নারাজ এলাকাবাসী। কারণ মাঠটি স্থানীয় শিশু-কিশোর ও যুবকদের খেলাধুলার একমাত্র স্থান। চুক্তির আওতায় মাঠটি ভারতের অংশ হলেও এতোদিন এটি নিজেদের আয়ত্তে নেয়নি বিএসএফ। বাংলাদেশের মানুষ মাঠটি ব্যবহার করে আসছেন। বৃহস্পতিবার বিএসএফ ও বিজিবির নিয়মিত যৌথ সীমান্ত জরিপ চলাকালীন লাল পতাকা টানিয়ে সীমানা দেওয়ার চেষ্টা করে বিএসএফ। এতে স্থানীয়দের মাঝে খেলার মাঠ দখলের খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজনা দেখা দেয়। মাঠটি যে ভারতের অংশ তা মানুষ বুঝতে পারেনি। তারা ধরে নিয়েছেন বাংলাদেশের মাঠটি ভারত নিয়ে যাচ্ছে। এজন্য উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিজিবির হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। যৌথ জরিপ দল পরবর্তী সময়ে জরিপ কাজ পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরপর ফিরে যায় বিএসএফ। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।”
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী বলেন, “যতটা জানতে পেরেছি সীমান্তে যৌথ সমীক্ষা চলছিল। তবে কে বা কারা সমীক্ষা চালিয়েছে, তা আমরা জানি না।”
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ Globalsylhet24.com