ওসমানীনগরে এক প্রবাসীর বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার উমরপুর ইউনিয়নের খাদিমপুর গ্রামের যুক্তরাজ্যপ্রবাসী গোলাম রব্বানীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ উঠেছে, এই হামলা ও লুটপাটে নেতৃত্ব দিয়েছেন যুবদলের এক নেতা।
এ ঘটনায় আজ শুক্রবার দুপুরে বাড়ির মালিক ডলি বেগম (৫৩) উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আহবাব হোসেনসহ ২১ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেছেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৪০ থেকে ৪৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উমরপুর ইউনিয়নের খাদিমপুর গ্রামের বাসিন্দা ও উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আহবাব হোসেনের বাবা চেরাগ আলীসহ কয়েকজনের জুয়া খেলার একটি ভিডিও সম্প্রতি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটি যুক্তরাজ্যপ্রবাসী গোলাম রব্বানী ছড়িয়েছেন বলে অভিযোগ যুবদল নেতা আহবাবের। এরই জেরে গতকাল বিকেলে খাদিমপুর পূর্বপাড়া জামে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে প্রবাসীর বাড়িতে অর্ধশতাধিক লোক নিয়ে হামলা করা হয়। হামলাকারীরা ঘরে ঢুকে আসবাব, স্বর্ণালংকার, মুঠোফোন, নগদ টাকাসহ প্রায় ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকার মালামাল লুট ও ক্ষতিগ্রস্ত করে। প্রবাসীর ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ডলি বেগম জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তখন হামলাকারীরা আবার মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোকজন জড়ো করে পুলিশের ওপর চড়াও হয়। পরে সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় ১৫ জনকে আটক করে যৌথ বাহিনী।
যুবদল নেতা আহবাব হোসেন বলেন, আমার বাবা জুয়া খেলেননি। এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ সাধারণ কার্ড খেলছিলেন। সেটিকে অন্যভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ওই প্রবাসী ও তাঁর বাড়ি পুরো গ্রামের সঙ্গে বিভিন্নভাবে ঝামেলা করছে। ঘটনার দিনও তাঁদের বাড়িতে মারামারি করার জন্য প্রস্তুতি হিসেবে বহিরাগত মানুষজন নিয়ে রেখেছিল। খবর পেয়ে গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে তাঁদের বাড়িতে গিয়েছিল। গ্রামবাসী ওই বাড়ির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। এ বিষয়ে এলাকায় বৈঠক বসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যপ্রবাসী গোলাম রব্বানী বলেন, আহবাবের বাবা চেরাগ আলীর জুয়া খেলার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় তাঁর নেতৃত্বে আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আমি প্রশাসনসহ সবার কাছে সন্ত্রাসী হামলা, লুট ও ভাঙচুরের বিচার চাই।’
ওসমানীনগর উপজেলা যুবদলের সভাপতি ফজল আহমদ জনি বলেন, খাদিমপুর প্রবাসীর বাড়ি ভাচুরের সাথে বিএনপি, যুবদল জড়িত নয়। এটা আহবাবুলের ব্যক্তিগত কাজ। আমাদের দলে কোন চাঁদাবাজ দখলদারের স্থান নেই।
ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোনায়েম মিয়া বলেন, খাদিমপুরে হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
মন্তব্য করুন