মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় বাদে ভূকশিমইল মোহাম্মদিয়া দাখিল মাদরাসার নির্বাহী কমিটির সদস্য মনোনয়ন সংক্রান্ত একটি সরকারি চিঠি জালিয়াতির অভিযোগে এক মাদরাসা শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২৩ মে) বিকেলে অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহুরুল হোসেন।
গ্রেপ্তার শিক্ষকের নাম মো. মাছুম আহমেদ। তিনি উপজেলার বাদে ভূকশিমইল গ্রামের বাসিন্দা।
বর্তমানে তিনি কুলাউড়ার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের চৌধুরীবাজার জিএস কুতুব শাহ দাখিল মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। এর আগে নিজ গ্রামের বাদে ভূকশিমইল মোহাম্মদিয়া দাখিল মাদরাসার সুপারের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৮ নভেম্বর উপজেলার নির্বাহী অফিসার কুলাউড়ার স্মারকমূলে দাখিলকৃত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বাদে ভূকশিমইল মোহাম্মদিয়া মাদরাসার নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে হাজী মো. তনজব আলী ও মো. আব্দুল জলিল তুলাকে সেই বছরের ২০ নভেম্বর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়। পরবর্তীতে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জানতে পারেন যে জারি হওয়া ওই সরকারি চিঠির তারিখ পরিবর্তন করে ১০ নভেম্বর ২০২৪ দেখিয়ে মাদরাসা কমিটির সভাপতি ফজল আহমদ ফজলু ও সদস্য সচিব মো. তনজব আলী জালিয়াতি করে স্বাক্ষর ও সিলমোহর দিয়ে মাদরাসার প্যাডে ৫ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাহী কমিটির তালিকা তৈরি করে তা অনুমোদনের জন্য ঢাকায় মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে পাঠিয়েছেন।
ওই চিঠিতে পূর্বে মনোনীত দুই সদস্যের নাম অপরিবর্তিত রেখে নির্বাহী কমিটি গঠনের চেষ্টা চালানো হয়। ওই সময় এ জালিয়াতির সঙ্গে শিক্ষক মাছুম আহমেদ জড়িত ছিলেন।
লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক তদন্তে চিঠি জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশে শিক্ষক মাছুম আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ দিকে গত ২০ মে বাদে ভূকশিমইল মোহাম্মদিয়া দাখিল মাদরাসার সভাপতি যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফজল আহমেদ ফজলু, সদস্য সচিব মো. তনজব আলীর বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ এনে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা বিদ্যা মনি সিংহ।
উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহুরুল হোসেন শুক্রবার বিকেলে বলেন, তদন্তে জালিয়াতির সত্যতা পাওয়ায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশে শিক্ষক মাছুম আহমদকে গ্রেপ্তার করা করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য দুইজনের বিরুদ্ধেও থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কুলাউড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সুদীপ্ত শেখর ভট্টাচার্য্য বলেন, সরকারি পত্র জালিয়াতির ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষককে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
মন্তব্য করুন